মোর নিউজ, খুলনা: ফর্মুলা কারের আদলে এবার তৈরি করা হলো ‘কিলোফ্লাইট আলফা’ নামের রেসিং কার। খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের প্রচেষ্টায় ২৮ সদস্যের টিম ‘কিলোফ্লাইট’ এ গাড়িটি প্রস্তুত করেছে। পরিবেশবান্ধব পাট দিয়ে তৈরি করা হয়েছে গাড়িটির বডিসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অংশ ।
এদিকে, কুয়েট) মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের শিক্ষার্থীদের তৈরি এই ‘কিলোফ্লাইট আলফা’ গাড়িটি ফর্মুলা স্টুডেন্ট ইউকে প্রতিযোগিতার অনলাইন ইভেন্টে অংশ নিয়েছে। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ৬৪টি দেশ অংশ নেয় এই প্রতিযোগিতার লাইভ ও অনলাইন দুটি ইভেন্টে, যা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সাড়া ফেলেছে। কুয়েট শিক্ষার্থীরা তিন বছরের চেষ্টায় গাড়িটি তৈরি করে প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার মধ্য দিয়ে দেশকে বিশ্ব দরবারে তুলে ধরেছেন।
কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী অম্লান বিশ্বাস বলেন, মূলত ফর্মুলা স্টুডেন্ট ইউকে টার্গেট করে বানানো হয়েছে গাড়িটি। দেশের ঐতিহ্যকে ধরে রাখার জন্য গাড়িটির সম্পূর্ণ বডি জুট ফাইবার দিয়ে তৈরি করা। দেওয়া রয়েছে উন্নতমানের ইঞ্জিন, গিয়ার, ব্রেক, মিটার। চালকের বসার সুরক্ষাব্যবস্থাসহ গাড়িটি চলতে পারবে ঘণ্টায় ১৬২ কিলোমিটার বেগে।
অম্লান বিশ্বাস আরো বলেন, এটি তৈরির পর আমরা অংশ নিয়েছিলাম ফর্মুলা স্টুডেন্ট ইউকে প্রতিযোগিতায়। আমরা ৩৩তম হয়েছি বিশ্বের ৬৪টি দেশের মধ্যে। বাংলাদেশ থেকে একমাত্র আমরাই অংশ নিয়েছি। এই অর্জনকে সামনে রেখে আমরা আগামী বছর চ্যাম্পিয়নশিপ টার্গেট করে কাজ করছি।
একই ডিপার্টমেন্টের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী ও কিলোফ্লাইটের টিম ম্যানেজার সাফায়েত সাইমুম বলেন, ২০১৮ সালে টিম কিলোফ্লাইট সৃষ্টি হয়। গাড়ি তৈরি শেষ হয় চলতি বছরের জুলাই মাসে।
টিমের ক্যাপ্টেন এরফান ইসলাম বলেন, দেশকে এগিয়ে নিতে এবং দক্ষ ইঞ্জিনিয়ার তৈরির জন্য এই উদ্যোগ। এই রেসিং কারটি প্রস্তুত করা হয়েছে কুয়েটের সাবেক শিক্ষার্থী ও নিজেদের অর্থায়নে।
কুয়েটের মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্টের অধ্যাপক ইঞ্জিনিয়ার ড. মুহাম্মদ মাছুদ বলেন, আমি টিম কিলোফ্লাইটের অ্যাকাডেমিক অ্যাডভাইজার হিসেবে ছিলাম প্রজেক্টের শুরু থেকেই। প্রশিক্ষণ দেওয়ার ব্যবস্থা করা হয় ২৮ জন শিক্ষার্থীর টিমকে। শিক্ষকদের সহযোগিতায় এবং তারা নিজেরাই ডিজাইন করে সম্পূর্ণ নিজস্ব উদ্যোগে সফলভাবে গাড়ি তৈরির কাজ শেষ করতে পেরেছে। কুয়েটে এটিই প্রথম অর্জন। দেশের জন্য এটি একটি মাইলফলক এবং বিশ্ববিদ্যালয় ও ডিপার্টমেন্টের জন্য গর্বের।
অধ্যাপক ড. মো. সাহিদুল ইসলাম আশা প্রকাশ করে বলেন, এই রেসিং কার দিয়ে শুধু বাংলাদেশ নয়, সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করতে পারবে কুয়েটের শিক্ষার্থীরা।